মোঃ ছামিউল ইসলাম, জামালপুর প্রতিনিধিঃ সরকারের জরুরী সেবা গ্রহনের জন্য ৯৯৯ কল দিয়েও বন্ধ করা যায়নি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ৬ নং আদ্রা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের গুজামানিকা নয়াপাড়া গ্রামে হানিফ উদ্দিনের মেয়ে তানজিলা আক্তার( ১৪) এর সামাজিক ব্যাধি বাল্য বিবাহ।

এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়- গুজামানিকা নয়াপাড়া গ্রামে সাবেক মেম্বার আলতাফুর রহমান, বর্তমান মেম্বার প্রার্থী চাউল ব্যবসায়ী ভুট্রো ও বহিস্কৃত যুবলীগ নেতা আরিফুল ইসলাম সুমনের ছত্রছায়ায় হানিফ উদ্দিনের নাবালিকা ২য় মেয়ে তানজিলাকে জোর পুর্বক ১১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার মাদারগঞ্জ উপজেলার ২ নং কড়ুইচুড়া ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম মহিষবাথান গ্রামের মরহুম মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান ময়নার ২য় ছেলে রকিবুল ইসলাম হৃদয় (২২) এর সাথে আনুষ্ঠনিক ভাবে ঢাকডোল পিটিয়ে গেইট- ডেকোরেশন করে বিয়ের আয়োজন করা হয়।

বিষয়টি এলাকার সচেতন মহল ও মিডিয়া কর্মীদের তৎপরতায় প্রথমে ইউনও,ওসি ও জনপ্রতিনিধিদের দফায় দফায় ফোন ও যোগাযোগ করেও বাল্য বিবাহ বন্ধে কোন সাড়া না পেয়ে ৯৯৯ এ ফোন করে যোগাযোগ করা হয় ৯৯৯ এর কনফারন্সে এর মাধ্যমে মেলান্দহ থানা ডিউটি অফিসার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যক্তির অভিযোগ আমলে নিয়ে ফোর্স পাঠিয়ে বিয়ে বাড়ীর গেইট ও ছামিয়ানা ভেঙ্গে ফেলে বাল্য বন্ধ করতে বলে আসে এবং পুলিশ ফোর্সদের কথা না মানলে ও বাল্যবিবাহ দিলে বিবাহ সম্পদানকারীদের বিরুদ্ধে আইনে আওতায় কঠিন শাস্তি ভোগের হুশিয়ারি করে চলে আসে।

পরে সন্ধ্যায় হেলাল উদ্দিনের শশুরবাড়ী গুনারিতলা ইউনিয়নের গুলারিতলা কোনাপাড়ায় তানজিলার মামা লাল মিয়ার বাড়ীতে বর রকিবুল ইসলাম হৃদয়ের ছোট ভাই মাদ্রাসা পড়ুয়া সাগরের মাধ্যমে বিবাহ পড়িয়ে মেয়ের শশুয়ালয় মহিষবাথান গ্রামে জোর পুর্বক তুলে দেয়া হয়। পরের দিন শনিবার বিকেলে অটোচালক বাদশা গং দের মারফত ফার্ণিচার আসবাবপত্র ও লোকজন পাঠিয়ে ধুমদাম করে খাওয়া দাওয়া করানো পর নব বধু তানজিলা ও হুজুর বর হৃদয়কে জোরখালী তানজিলার বড়বোনের বাড়ীতে রাখা হয়।

এলাকাবাসী মিড়িয়া কর্মীদের জানান-প্রসাশণের লোক আসার পরেও বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। পরে বিষয়টি নিয়ে খোজাখুজির পর বরের বাড়ীতে গিয়ে বরের মা,বোন ভাই,ভাবী, প্রতিবেশী ও মেম্বার নেতাকর্মীদের সাথে কথা বললে তা জানা বিষয়টি গোপনেই শেষ করতে চেয়েছিলাম এবং বাল্য বিবাহ রেজিস্ট্রি করা সম্ভব নয় বিধায় রেজিস্ট্রি / কাবিল করিনি।মেয়ের অভিভাবকরাই তো জোর করে বিয়ে দিয়েছে। বরের মা রোকেয়া (৬৫) বলেন – আমার ছেলে হৃদয় (হুজুর) সাবালক হয়ছে তবে মেয়ে তানজিলা নাবালক ও জন্ম নিবন্ধন না থাকায় গোপনে বিয়ে শেষ করতে হয়ছে। আমাদের কোন দোষ নাই।

কন্যা পক্ষের মেম্বার প্রার্থী বহিস্কৃত যুবলীগ নেতা সুমন বলেন- বাল্য কোন অপরাধ বা অন্যায় না।আর আমরা বিয়ে দিবো কে ফিরা দেখবো। আরেক মেম্বার প্রার্থী মেয়ের চাচা ভুট্রা বলেন- বাল্য বিবাহটা অন্যায় তবে মেয়ে বড় হয়েছে এবং ভালো সম্ন্ধ এসেছে তাই কোন কিছু না ভেবে বিয়ে দিয়ে দিলাম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একই গ্রামের একাধিক লোক বলেন -কয়েক বছর আগে জামালপুর জেলাকে বাল্যবিবাহ মুক্ত ঘোষনা করলেও মনে হয় তা শুধু কাগজে কলমে রয়ে গেছে ।ছলছে প্রতিনিয়ত কোন কোননা এলাকা বাল্যবিয়ে।

 

কলমকথা/বিসুলতানা